বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদার প্রতীক মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্যকে উপজীব্য করে গত বুধবার ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ হাউজে একটি আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে নবগঠিত ব্রাজিল সরকারের সংস্কৃতিমন্ত্রী মারগারেট মেনেজেস উপস্থিত ছিলেন। গ্রামি অ্যাওয়ার্ডের জন্য দুইবার মনোনয়নপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গায়িকা মারগারেট মেনেজেস একজন সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে ব্রাজিলে ব্যাপক সমাদৃত।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস, তাৎপর্য ও গুরুত্ব প্রচারের জন্য ব্রাজিল সরকারের নবগঠিত সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাথে ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস একযোগে কাজ করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবং আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ব্রাজিলের অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক উৎসব ‘দরিও কার্নিভালদ’ উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি থাকায় ভাষা শহীদদের গৌরবগাঁথা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাসকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানটি ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ হাউজে আগেই আয়োজন করা হয়।

মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের অবদানকে স্মরণ করে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ব্রাজিলের নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহনকারী মন্ত্রণালয়সমূহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ নারী মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সংস্কৃতিমন্ত্রী মারগারেট মেনেজেস, ক্রীড়ামন্ত্রী আনা মোজের, পাবলিক সার্ভিস ম্যানেজম্যান্ট ও ইনোভেশন মন্ত্রী ইস্তার দ্যুরেখ, নারীনীতি বিষয়ক মন্ত্রী সিডা গনসালভেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী লুসিয়ানা সান্তোজ এবং ব্রাসিলিয়াতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের নারী রাষ্ট্রদূতগণ অনুষ্ঠানে ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি হিসেবে নারীর ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে গৃহীত সরকারী পদক্ষেপ ও এক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়াতে নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী টানা আট বছর ধরে বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়াতে শীর্ষস্থান ধরে রাখা সম্পর্কে আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানে নারীর ক্ষমতায়নে ব্রাজিল ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত নারীম ন্ত্রীগণ শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। সকলেই নারীর ক্ষমতায়ন এবং ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও বিকাশের উপর গুরুত্ব প্রদান করেন এবং বাংলাদেশের সাথে এ লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী মারগারেট মেনেজেসের সম্মানে বাঙ্গালি ঐতিহ্যবাহী খাবারের সমন্বয়ে একটি নৈশভোজের আয়োজন করেন। আমন্ত্রিত অতিথিগণ এ আয়োজন ও ব্রাসিলিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের আন্তরিক প্রচেষ্টার অকুণ্ঠ প্রশংসা করেন।